ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হজম প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করবে আটটি মশলা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৭
  • ১৯৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের দেহের স্বাস্থ্য ও ভালো থাকায় হজম প্রক্রিয়া একটি গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করে। হজম প্রক্রিয়ার মানে শুধু খাদ্য ভাঙ্গা এবং দেহকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করা নয়। একটি ভালো হজম প্রক্রিয়ার মানে হলো একটি দীর্ঘ এবং রোগমুক্ত জীবন। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যবান হওয়ার রহস্য লুকিয়ে থাকে মূলত অন্ত্রে। আর এ কারণেই সঠিক খাবার খাওয়া এবং দেহকে প্রয়োজনীয় সব উপাদান সরবরাহ করা এবং হজম প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি সক্রিয় রাখার মাধ্যমে দেহের যত্ন নিতে হবে।

হজম প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃদ সবগুলো অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সমানভাবে সক্রিয় রাখতে যথাযথ পরিমাণে খাবার খেতে হবে। কমও নয় আবার বেশিও নয়। এজন্য দেহের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। দেহই আপনাকে বলে দিবে কখন সে ক্ষুধার্থ আর কখন ক্ষুধার্ত নয়। খাবার ভালোভাবে হজম করার জন্য পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। এবং খুব ঠাণ্ডা বা ফ্রিজে রাখা খাবার খাওয়া যাবে না।

গপাগপ করে না খেয়ে বরং ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। খাবার খাওয়ায় অনিয়ম করা যাবে না।

খাবার ভালোভাবে হজম করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হজম প্রক্রিয়ায় অগ্নির ভারসাম্য বজায় রাখা। অনেক সময় অগ্নির ঘাটতির ফলে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম এবং সাকালে হাঁটতে না পারার মতো সমস্যা দেখা দেয়। আবার অগ্নির বাহুল্যের কারণে জ্বালাপোড়া, ডায়রিয়া এবং বিরক্তি ভাব দেখা দেয়। অগ্নির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকরভাবে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এবং সঠিক খাবারটি খেতে হবে। এবং প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে। আপনি যদি একবেলায় অনেক বেশি খাবার খান এবং পরের বেলায় কিছুই না খান তাহলে অগ্নির ভারসাম্য নষ্ট হয়। আর কোন খাবারের সঙ্গে কোন খাবার খেলে সর্বোচ্চ হারে পুষ্টি শোষণ হবে তাও জানতে হবে।

এখানে এমন কয়েকটি মশলার তালিকা দেওয়া হলো যা এই অগ্নি বা হজম শক্তি বাড়ায়।

১. জিরা
গ্যাস ও অম্বলের মতো সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এই মশলাটির ব্যবহার অনেক পুরোনো। এতে আরো রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান যা পাকস্থলীর ব্যাথা এবং অস্বস্থিকর অনুভূতি দূর করে।

২. হলুদ
রান্নায় এর ব্যবহার না হলেই নয়। এটি শুধু তরকারির রঙ্গ সুন্দর করার জন্যই নয় বরং রোগ নিরাময়ের জন্যও ব্যবহার করা হয়। এটি একই সঙ্গে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নাশক। এছাড়া ক্যান্সার, জিনগত ত্রুটি এবং প্রদাহ প্রতিরোধও করে। হলুদ ত্বকেরও ঔজ্বল্য বাড়ায়।

৩. আদা
হজমে সহায়ক, ব্যাথা নাশক এবং রোগ প্রতিরোধী উপাদানে সমৃদ্ধ আদা। এটি কফ ও সর্দি ভালো করে। যে কারণে শীতকালীন তরকারি, ভাজা এবং চা-তে ব্যবহার করা হয়।

৪. মেথি বীজ
এটি আঁশ এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা প্রাকৃতিক হজমে সহায়ক হিসেবে কাজ করে এবং দেহ থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। আর এর পিচ্ছিলকারী উপাদান পাকস্থলী এবং নাড়িভুড়িকে মসৃণ করে তোলে।

৫. এলাচ
এর শক্তিশালী সুগন্ধি হজমে সহায়ক এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে। বদহজম, গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো পাকস্থলীর নানা সমস্যা দূর করতেও বেশ কার্যকর এটি। আর অন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাদ্যের চলাচল বাড়াতে সহায়ক রাসায়নিকও রয়েছে এতে।

৬. লবঙ্গ
এর ৬০-৯০ শতাংশই ইউজেনল অয়েল। এই তেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক, অনুভূতিনাশক এবং রক্তক্ষরণরোধী উপাদানের সমৃদ্ধ। পাকস্থলীতে গ্যাস নির্গমণ ঠেকাতে বা গ্যাস বের করে দিতে বেশ কার্যকর এটি।

৭. দারুচিনি
হজম শক্তি বাড়ায় এবং পুষ্টিশোষণ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে। এটি ব্যাকটেরিয়া নাশক এবং পাকস্থলী ও অন্ত্রের সংক্রমণ রোধ করে।

৮. গোলমরিচ
হজম প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করে এবং হজমে সহায়ক এনজাইমের নিঃসরণ বাড়ায়। যা প্রোটিন হজমে সহায়তা করে।
এই মশলাগুলো হজম প্রক্রিয়ায় অগ্নির ভারসাম্য রক্ষা করা, বিষ বের করে দেওয়া এবং বদহজম ও গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দূর করতে সহায়ক। স্যুপ, সেদ্ধ খাবার, মাংস, ভাজা-ভাজি এবং তরকারিতে ব্যবহার করা যায়।

সূত্র: এনডিটিভি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হজম প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করবে আটটি মশলা

আপডেট টাইম : ১২:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের দেহের স্বাস্থ্য ও ভালো থাকায় হজম প্রক্রিয়া একটি গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করে। হজম প্রক্রিয়ার মানে শুধু খাদ্য ভাঙ্গা এবং দেহকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করা নয়। একটি ভালো হজম প্রক্রিয়ার মানে হলো একটি দীর্ঘ এবং রোগমুক্ত জীবন। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যবান হওয়ার রহস্য লুকিয়ে থাকে মূলত অন্ত্রে। আর এ কারণেই সঠিক খাবার খাওয়া এবং দেহকে প্রয়োজনীয় সব উপাদান সরবরাহ করা এবং হজম প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি সক্রিয় রাখার মাধ্যমে দেহের যত্ন নিতে হবে।

হজম প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃদ সবগুলো অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে সমানভাবে সক্রিয় রাখতে যথাযথ পরিমাণে খাবার খেতে হবে। কমও নয় আবার বেশিও নয়। এজন্য দেহের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। দেহই আপনাকে বলে দিবে কখন সে ক্ষুধার্থ আর কখন ক্ষুধার্ত নয়। খাবার ভালোভাবে হজম করার জন্য পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। এবং খুব ঠাণ্ডা বা ফ্রিজে রাখা খাবার খাওয়া যাবে না।

গপাগপ করে না খেয়ে বরং ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। খাবার খাওয়ায় অনিয়ম করা যাবে না।

খাবার ভালোভাবে হজম করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হজম প্রক্রিয়ায় অগ্নির ভারসাম্য বজায় রাখা। অনেক সময় অগ্নির ঘাটতির ফলে গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম এবং সাকালে হাঁটতে না পারার মতো সমস্যা দেখা দেয়। আবার অগ্নির বাহুল্যের কারণে জ্বালাপোড়া, ডায়রিয়া এবং বিরক্তি ভাব দেখা দেয়। অগ্নির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকরভাবে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এবং সঠিক খাবারটি খেতে হবে। এবং প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে। আপনি যদি একবেলায় অনেক বেশি খাবার খান এবং পরের বেলায় কিছুই না খান তাহলে অগ্নির ভারসাম্য নষ্ট হয়। আর কোন খাবারের সঙ্গে কোন খাবার খেলে সর্বোচ্চ হারে পুষ্টি শোষণ হবে তাও জানতে হবে।

এখানে এমন কয়েকটি মশলার তালিকা দেওয়া হলো যা এই অগ্নি বা হজম শক্তি বাড়ায়।

১. জিরা
গ্যাস ও অম্বলের মতো সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এই মশলাটির ব্যবহার অনেক পুরোনো। এতে আরো রয়েছে প্রদাহরোধী উপাদান যা পাকস্থলীর ব্যাথা এবং অস্বস্থিকর অনুভূতি দূর করে।

২. হলুদ
রান্নায় এর ব্যবহার না হলেই নয়। এটি শুধু তরকারির রঙ্গ সুন্দর করার জন্যই নয় বরং রোগ নিরাময়ের জন্যও ব্যবহার করা হয়। এটি একই সঙ্গে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নাশক। এছাড়া ক্যান্সার, জিনগত ত্রুটি এবং প্রদাহ প্রতিরোধও করে। হলুদ ত্বকেরও ঔজ্বল্য বাড়ায়।

৩. আদা
হজমে সহায়ক, ব্যাথা নাশক এবং রোগ প্রতিরোধী উপাদানে সমৃদ্ধ আদা। এটি কফ ও সর্দি ভালো করে। যে কারণে শীতকালীন তরকারি, ভাজা এবং চা-তে ব্যবহার করা হয়।

৪. মেথি বীজ
এটি আঁশ এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। যা প্রাকৃতিক হজমে সহায়ক হিসেবে কাজ করে এবং দেহ থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়। আর এর পিচ্ছিলকারী উপাদান পাকস্থলী এবং নাড়িভুড়িকে মসৃণ করে তোলে।

৫. এলাচ
এর শক্তিশালী সুগন্ধি হজমে সহায়ক এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে। বদহজম, গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো পাকস্থলীর নানা সমস্যা দূর করতেও বেশ কার্যকর এটি। আর অন্ত্রের মধ্য দিয়ে খাদ্যের চলাচল বাড়াতে সহায়ক রাসায়নিকও রয়েছে এতে।

৬. লবঙ্গ
এর ৬০-৯০ শতাংশই ইউজেনল অয়েল। এই তেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক, অনুভূতিনাশক এবং রক্তক্ষরণরোধী উপাদানের সমৃদ্ধ। পাকস্থলীতে গ্যাস নির্গমণ ঠেকাতে বা গ্যাস বের করে দিতে বেশ কার্যকর এটি।

৭. দারুচিনি
হজম শক্তি বাড়ায় এবং পুষ্টিশোষণ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে। এটি ব্যাকটেরিয়া নাশক এবং পাকস্থলী ও অন্ত্রের সংক্রমণ রোধ করে।

৮. গোলমরিচ
হজম প্রক্রিয়াকে আরো সহজ করে এবং হজমে সহায়ক এনজাইমের নিঃসরণ বাড়ায়। যা প্রোটিন হজমে সহায়তা করে।
এই মশলাগুলো হজম প্রক্রিয়ায় অগ্নির ভারসাম্য রক্ষা করা, বিষ বের করে দেওয়া এবং বদহজম ও গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা দূর করতে সহায়ক। স্যুপ, সেদ্ধ খাবার, মাংস, ভাজা-ভাজি এবং তরকারিতে ব্যবহার করা যায়।

সূত্র: এনডিটিভি